গণভোটের ব্যালট হবে ভিন্ন রঙের: আইন উপদেষ্টা

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন অনুষ্ঠিতব্য গণভোটে ব্যালটপত্র পৃথক রঙের করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ভোটারদের সুবিধার্থে ব্যালটকে জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট থেকে আলাদা রাখাই এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গণভোট অধ্যাদেশের গেজেট আজ বা কালকের মধ্যেই প্রকাশ হতে পারে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। এদিন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে গণভোট অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “গণভোটে প্রশ্ন থাকবে একটি মাত্র। ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’—এই দুইটি অপশনের যেকোনো একটি বেছে নেবেন। জাতীয় নির্বাচনের ভোটের সময়ই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তাই ব্যালটের রং আলাদা রাখা হবে, যাতে ভোটাররা কোন ব্যালট কোনটি—এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়েন।”

তিনি আরও জানান, সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হবে—গণভোটের দায়িত্বও পালন করবেন তারাই। একই কাঠামো ব্যবহার করা হলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় সামঞ্জস্য থাকবে বলে জানান তিনি।

গণভোটে ভোট দিতে হবে চারটি পয়েন্টে—যার একটি হলো জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাজনীতিকদের প্রস্তাবিত ৩০টি সংস্কার বাস্তবায়নে বিজয়ী দলের বাধ্যবাধকতা। জনগণের সরাসরি মতামত নেয়ার মাধ্যমে সংস্কারগুলো প্রয়োগে সরকারের অঙ্গীকার নিশ্চিত করা হবে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের অংশ হিসেবে। কমিশন মনে করে, গত কয়েক দশকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অনাস্থা এবং শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা দূর করতে জনগণের সরাসরি মতামত জানা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এর আগে, গত ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদ গণভোট আইন অনুমোদন করে। বৈঠক শেষে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কয়েক কার্যদিবসের মধ্যেই গণভোট অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। আজকের বৈঠক সেই প্রক্রিয়ারই অংশ।

ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতি জনগণের আস্থা পুনর্গঠন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গণভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা চাই, জনগণ তাদের পছন্দ ও মতামত স্পষ্টভাবে জানান।”

উপদেষ্টা পরিষদের এই বিশেষ বৈঠকে আইন, প্রশাসন, নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা গণভোট পরিচালনা, ব্যালট প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ভোট গ্রহণ ও গণনার বিষয়ে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

সরকার আশা করছে, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের পরিষ্কার মতামত পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োগ সহজ হবে এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *