মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম:
গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানা পুলিশের সামনেই সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেনের উপর হামলার পর উনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা সাজানো মামলায় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ই অক্টোবর ২০২৫ ইং) গাজীপুরের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আলমগীর আল মামুন জামিন মঞ্জুর করেন।
সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জাতীয় দৈনিক প্রলয় পত্রিকার চীফ রিপোর্টার। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন সদর থানার সাহাপাড়া এলাকার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজ মণি সাহা @ রাজু। মামলায় সাংবাদিক আনোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও চাঁদা আদায়ের অপরাধ দেখিয়ে দণ্ডবিধির ৩৮৫/৩৮৬ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। এর আগে আনোয়ার গত ২৩ আগস্ট ও ১৮ আগস্ট দৈনিক প্রলয় পত্রিকায় এই রাজ মণি সাহা রাজুর বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর এই মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতে সাংবাদিকের জামিনের পক্ষে শুনানি করেন গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট সোলেমান মিয়া, অ্যাডভোকেট দিদার গণি ও অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলামসহ প্রায় ২০/২৫ জন আইনজীবী।
জামিন পাওয়া সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জানান, ন্যায়বিচারের উপর আস্থাশীল বলেই আইন মেনে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছি। আমার বিরুদ্ধে যেভাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা করা হয়েছে, তাতে পেশাগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
জামিন শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবীরা জানান, এই চাঁদাবাজি মামলার ঘটনার দিন বাদী নিজেই প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার চেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামি হিসেবে পলাতক ছিলেন। এছাড়াও বাদীর বিরুদ্ধে ২টি মাদক মামলাসহ একাধিক মামলাও রয়েছে।
এদিকে সাংবাদিক নেতা মোঃ আবু জাফর সুর্য দাবি করেন, মূলত সাংবাদিকদের ওপর সংঘটিত হামলার ঘটনা আড়াল করতেই পাল্টা মামলা করেন রাজু সাহা। আজ সেই আসামি, এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। আমরা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।
এর আগে গত ৬ই আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখে নগরের সাহাপাড়া এলাকায় রেলের জায়গায় মার্কেট বসিয়ে চাঁদাবাজি ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেনের অনুসারীরা। এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে পুলিশের সামনেই মারধরের শিকার হয়েছিলেন এই সাংবাদিক। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সংবাদকর্মীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং সারাদেশে এ ঘটনায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছিল।