মোঃ মশিউর রহমান, টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস রফিকুল ইসলাম (৪২) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) টাঙ্গাইল। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন তালুকদার এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
এ সময় তিনি বলেন, রোববার (১২ অক্টোবর) গভীর রাতে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার নাথেরপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি মকবুল (৫৫) কে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (১৩ অক্টোবর) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততা ও অন্যান্য আসামিদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় বিস্তারিত দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সকালে টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার নাথেরপাড়া গ্রামের জনৈক মামুন মিয়ার জমিতে ঝোঁপের পাশে রফিকুল ইসলাম (৪২) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ধনবাড়ী থানা পুলিশ। পরবর্তীতে নিহতের মা ছাহেরা বেওয়া (৫৮) বাদী হয়ে ধনবাড়ী থানায় ৩ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মামার বাড়ি থেকে প্রাপ্য ওয়ারিশের সম্পত্তি ও গরু চুরির বিষয় নিয়ে রফিকুলের সাথে তার মামা ও মামাতো ভাইদের বিরোধ ছিল। জমি ও ঘর ভাঙার বিষয় নিয়েও রফিকুলের সাথে গ্রেফতারকৃত আসামি মকবুল ও হাফিজুরের বিরোধ ছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করেই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা হয়। ঘটনার কয়েক দিন আগে রফিকুলের মামা রেহানের বাড়িতে মকবুল, হাফিজুর, রেহান, জলিল, সেকান্দার ও আলম মিলে রফিকুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে রফিকুলের মামাতো ভাই আলম তাকে মাদক সেবনের কথা বলে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মকবুল, হাফিজুর, রেহান, জলিল ও সেকান্দার উক্ত ক্ষেতের দক্ষিণ পাশে লুকিয়ে ছিল। তাদের হাতে বাঁশের লাঠি ছিল। রফিকুল সেখানে যাওয়া মাত্রই তারা এলোপাতাড়িভাবে লাঠি দিয়ে রফিকুলকে মারপিট করে এবং আলম মাথায় ও মুখে চা পাতি দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে সকলে মিলে রফিকুলের লাশ তার বাড়ির পাশের স্থানীয় মামুন গংদের বিরোধপূর্ণ জমিতে ফেলে রেখে আসে।