এ এম এম আহসান:
রাজধানীর ধানমন্ডির জিগাতলায় বসবাসরত লিজা আক্তার প্রিয়া স্বামী সৌরভ হোসেনের পরিবারের কাছে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় একের পর এক নির্যাতন, হয়রানি ও হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
লিজা আক্তার প্রিয়া অভিযোগ করেন, প্রথম পরিচয়ের পর থেকেই সৌরভ হোসেন তাকে একাধিকবার বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিছুদিন পর তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সৌরভ প্রিয়ার উপার্জিত অর্থের ওপর নির্ভর করতে থাকেন।
অভিযোগ অনুযায়ী এবং কোর্টের সি.আর. ৩০৮/২৪ মামলার নথিতে উল্লেখ আছে—বিয়ের কিছুদিন পর সৌরভ প্রিয়ার কাছ থেকে নগদ এক লাখ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালংকার নেন। পরে তিনি মোটরবাইক কেনার জন্য আরও তিন লাখ টাকা দাবি করেন। আপস শর্তে জামিন নেওয়ার পর আবারও ২৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না পেয়ে সৌরভ স্ত্রীকে ত্যাগের চেষ্টা শুরু করেন।
প্রিয়া জানান, তিনি স্বামীর সংসারে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য ধানমন্ডির বাসায় প্রবেশ করলে সৌরভ ও তার পরিবার তাকে স্ত্রী বা পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেন। এ সময় কিশোরগ্যাং হিসেবে পরিচিত সৌরভের অনুসারীরা তার ওপর হামলা চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের পর সৌরভের একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হয়। এর মধ্যে ফিজা আফসানা নামের এক নারীর সহায়তায় প্রিয়ার ওপর একাধিকবার হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় প্রিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সাংবাদিকরা তার সাক্ষাৎকার নিতে গেলে দেখা যায়, তিনি তখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি।
দেনমোহরের ১০ লাখ টাকা ও যৌতুকের দাবিতে মামলা দায়ের করলে সৌরভ উল্টো প্রিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন। মামলাটি পরে তদন্তের জন্য পিবিআই-তে যায়। তদন্ত কর্মকর্তা জামিল উদ্দিন রাশেদ এর প্রতিবেদনে বলা হয়,
“দায়ের করা মামলাটির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।”
এছাড়া, সৌরভ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রিয়ার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছড়িয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগও উঠেছে। এসবের মাধ্যমে তিনি ও তার সহযোগীরা প্রিয়াকে মামলা তুলতে চাপ দিতে থাকেন।
সম্প্রতি এক ঘটনায় সৌরভ হোসেন, তার আইনজীবী সাইদুর রহমান নান্নু ও পরকীয়া প্রেমিকা ফিজা মিলে লিজা আক্তার প্রিয়ার বাসার সামনে হামলার চেষ্টা চালান। প্রিয়ার দারোয়ানও হামলায় আহত হন। পরে তিনি বিষয়টি উত্তরখান থানায় জানান। থানার ওসি তাকে মামলা ও জিডি করার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে তদন্তে জিডির ঘটনাগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী লিজা আক্তার প্রিয়া গণমাধ্যমকে বলেন,
“আমি শুধু আমার ন্যায্য অধিকার চাই। কিন্তু তার বদলে আমাকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে আমাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে।”
বিস্তারিত আসছে দ্বিতীয় পর্বে…