ফতুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সালমা সুলতানার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

মোহাম্মদ হোসেন হ্যাপী:

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন ৭৩ নং ফতুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সালমা সুলতানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে জানা গেছে, ফতুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণী থেকে ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফী বাবদ ৫০/- টাকা, ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২০/- টাকা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া স্কুলে সরকারি দপ্তরী থাকার সত্ত্বেও স্কুলের আয়া-বুয়ার নাম করে প্রতি মাসে জনপ্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০/- টাকা নেওয়া হচ্ছে। আরও বিভিন্ন কৌশলে অনিয়ম ও দুর্নীতি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্কুলের সামনে সরেজমিনে গেলে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রথমে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।

পরবর্তীতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক বলেন,
“আমরা যদি এই প্রসঙ্গে কিছু বলি, আমাদের বাচ্চারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে পারে। তাই আমরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছি, আমরা শুধু বাচ্চাদের ফী বাবদ ৫০/- টাকা এবং বুয়ার বেতন বাবদ ২০০/- টাকা দিয়েছি। এমনকি ছাত্রদের ছোট একটি রুটিনের জন্যও ১০/- টাকা দিতে হয়েছে। আমরা গরীব, তাই সরকারি স্কুলে ভর্তি করেছি, কিন্তু এখানে ও টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া কিছু করা যায় না।”

তারা আরও বলেন,
“আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসি, প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক আছে। যদি আমরা তার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেই, সে কষ্ট পাবে। এমনকি আমাদের বাচ্চারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে পারে। অনুগ্রহ করে আমাদের কথা প্রকাশ করবেন না।”

উক্ত অভিযোগ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকার নিকট জানতে চাইলে শিক্ষিকা সালমা সুলতানা বলেন,
“বিদ্যালয়ের ছয়টি বাথরুম রয়েছে, সেগুলো পরিষ্কার রাখার জন্য একজন বুয়াকে নিয়োগ দিয়েছি। সেই কাজের জন্য অভিভাবকদের কাছ থেকে ২০০/- টাকা নেওয়া হয়। অনিয়ম-দূর্নীতির কি আছে? আমার সম্মান এবং অবস্থান কেড়ে নেওয়ার জন্য কেউ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

এ বিষয়ে ফতুল্লা জোনের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ফতুল্লা জোনের (এ টি ও) বিউটি বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম বলেন,
“এই বিষয়ে আমার কিছু জানা ছিল না। তবে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানাবো। অনিয়ম পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *