স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীর কদমতলী শ্যামপুর ও যাত্রাবাড়ি থানা এলাকায় বাসাবাড়িতে গ্যাস না পেয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্টি্রবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের রায়েরবাগ জোনাল অফিস (মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ—১ ও রাজস্ব বিভাগ ১) ঘেরাও করেছেন আবাসিক গ্রাহক বাসিন্দারা।রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে শ্যামপর, জুরাইন, রসুলপুর, রসুলবাগ, স্মৃতিধারা, পলাশপুর, জনতাবাগ, রায়েরবাগ, মোহাম্মদবাগ, কদমতলী, মেরাজনগর, দনিয়াসহ অন্ততঃ ৫০টি এলাকার বাসিন্দারা রায়েরবাগ তিতাসের কার্যালয় ঘেরাও করেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন এর নেতৃত্বে গ্যাস অফিস ঘেরাও করেন। পরে তিতাসের ডিজিএম প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে গ্যাস সংকটের বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেয়া হলে গ্রাহকরা এলাকায় ফিরে যান।দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সাবেক কাউন্সিলর জুম্মন মিয়া বলেন, দনিয়া, নুরপুরসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৬১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় আজ ১৫/১৬দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। যারফলে মানুষের বিশেষ করে বয়স্ক, শিক্ষার্থী ও শিশুদের চরম কষ্ট হচ্ছে।
কদমতলী এলাকার বাসিন্দা ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ খোরশেদ আলম খোকন বলেন, আমাদের ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় প্রায় ১০/১২ বছর গ্যাসের সংকট চলছে। বহবার গ্যাস অফিসে আবেদন করেছি কোন সুরাহা হয়নি। আজ ২০দিন যাবৎ মোটেই চুলায় গ্যাস নেই।
সাবেক কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা দলের সহ—সভাপতি খালেদা আলম বলেন, গ্যাস না থাকার কারণে বাসাবাড়িতে রান্না করতে পারছিনা। গ্রাম হলে লাকড়ি দিয়ে চুলায় রান্না করা যেত। শহরেতো বাসায় লাকড়ি দিয়ে রান্না করা সম্ভবনা।
দনিয়া ইউপির সাবেক মেম্বার ৬০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ ইউসুফ আলী ভুইয়া বলেন, গ্যাস কর্তৃপক্ষ বিল নিচ্ছে অথচ গ্যাস দিচ্ছেনা। আগামী ৩দিনে মধ্যে গ্যাস সরবরাহ না করা হলে ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের নিয়ে ঢাকা—চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। জনতাবাগ এলকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। বিষয়টি কতৃর্পক্ষ নজর দেয়া প্রয়োজন।
তানভীর আহমেদ বলেন,’গত প্রায় ৭—৮ বছর ধরে আমাদের এলাকায় চরম গ্যাস সংকট চলছে। রাতে কিছুটা গ্যাস পেলেও, দিনে পাওয়া যায়না। এর আগেও তিতাস অফিসে আমরা একাধিকবার সমস্যার বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি, অফিসে গিয়েছিলাম। কর্মকর্তারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সমাধান হয়নি। আজ ১৫দিন ধরে এলাকায় গ্যাস সরবরাহ একেবারেই নেই। এলাকায় রান্না করতে না পেরে হোটেল রেস্তরা থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। সর্বোপরি এলাকায় বাসাবাড়িতে হঠাৎ গ্যাস না থাকায় হাহাকার চলছে। বাসার ভাড়াটিয়ারা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা তিতাস অফিস ঘেরাও করেছি।’
জানতে চাইলে তিতাস গ্যাসের রায়েরবাগ জোনাল অফিসের ডিজিএম (মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ—১ ও রাজস্ব বিভাগ ১) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন,’ক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা এসেছিলেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আশ্বস্ত করেছি গ্রাহকদের এলাকা সার্ভে করে তাদের সমস্যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করব। তিনি আরও বলেন, গ্যাস সংকটের বিষয়টি দেখেন ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ সিস্টেম অপারেশন বিভাগের ডিজিএম। আর মুল কথা হলো গ্যাসের সমস্যাটা বর্তমানে জাতীয় সমস্যা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।