স্টাফ রিপোর্টার:
বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) যশোর সার্কেলের মটরযান পরিদর্শক তারিক হাসান ঘুষ, দুর্নীতি ও দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গ্রাহক হয়রানি করে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সড়ক, জনপদ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন মো. মোতাসিম বিল্লাহ নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মো. তারিক হাসান বিআরটিএ যশোর সার্কেলে কর্মরত আছেন। তিনি সহকারী মটরযান পরিদর্শক হিসেবে যোগদানের পর পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে মটরযান পরিদর্শক পদে রয়েছেন। তার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ, স্থায়ী ঠিকানা এবং কর সংক্রান্ত তথ্যও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, চাকুরীকাল থেকে তিনি দালাল সিন্ডিকেট চালিয়ে আসছেন এবং গাড়ীর মালিকানা পরিবর্তন, গাড়ীর রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ বিআরটিএ’র বিভিন্ন লাইসেন্সের কাজে দালাল নিয়োগ করে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অভিযোগে বলা হয়, এই টাকা বৈধ করার জন্য তিনি পিতার ও মাতার নামে আয়কর নথি খুলেছেন।
মো. মোতাসিম বিল্লাহ আরও অভিযোগ করেছেন যে, তারিক হাসান খামার, বাড়ি, গাড়ি ও শিল্প খাতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি একসময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে বিআরটিএতে রাজস্ব কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন এবং এখনো সেই প্রভাবের অধীনে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তার দালাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা সাধারণ মানুষকে প্রতিটি ধাপে—গাড়ী রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, স্মার্ট কার্ড, ডুপ্লিকেট সার্টিফিকেট ও রুট পারমিটসহ—ঘুষ দিতে বাধ্য করছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ঝিনাইদাহতে কর্মরত অবস্থায় তারিক হাসান লিটন নামের একজনের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার পরও কাজ না করার কারণে জনসম্মুখে ক্ষমা চেয়ে অফিস ছাড়তে বাধ্য হন। এছাড়াও তার গ্রামের বাড়ীতে বিশাল পুকুর ও জমি ক্রয় এবং ড্রাগনের প্রজেক্ট নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। তার ব্যবহৃত গাড়ির মূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকার বেশি। পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য একসাথে বিআরটিএতে চাকুরী করায় তিনি অবাধে অপকর্ম চালাতে পারছেন।
অভিযোগে যশোর সার্কেলের দালালদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে—আলতাফ, সাজু, পারভেজ, লিটন, সোহেল, রানা, ইসমাইল, শাজাহানসহ আরও কয়েক ডজন দালাল গ্রাহক হয়রানিতে সক্রিয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, তার বর্তমান সহকারী পরিচালক আত্মীয় হওয়ায় ঘুষ ও দুর্নীতির মাত্রা আরও বেড়েছে।
এই অভিযোগে তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে বিআরটিএ যশোর সার্কেল বা অভিযুক্ত কর্মকর্তা তারিক হাসানের বক্তব্য এই প্রতিবেদনের সময় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।