স্টাফ রিপোর্টারঃ
সমসাময়িক বাংলাদেশে যুব সমাজের অবস্থান, ভাবনা ও প্রত্যাশা জানার জন্য সরাসরি ও অনলাইন জরিপের মাধ্যমে সম্প্রতি ‘ইয়ুথ ম্যাটার্স সার্ভে’ শীর্ষক জরিপ পরিচালনা করে বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি)। আজ সোমবার, ২৭ জানুয়ারী বিওয়াইএলসির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ১৫৭৫ জন সরাসরি ও অনলাইনে ১৬৬৩ জন তরুণ এই জরিপে অংশ নেয়। বিওয়াইএলসি প্রতি পাঁচ বছর অন্তর বিশেষত জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে এই জরিপ পরিচালনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে- বিওয়াইএলসি। বিগত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে যে পরিবর্তিত পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে তাতে তরুণরা আগামীর বাংলাদেশ গঠনে কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে তা তুলে ধরাই এই বছরের জরিপের মূল উদ্দেশ্য।
সারাদেশ জুড়ে অক্টোবর ও নভেম্বর মাস জুড়ে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে তরুণদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা, জলবায়ু পরিবর্তন, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও সুশাসন, তথ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিপ্রয়াণ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়।
এ জরিপের ফলাফলে তরুণদের আকাঙক্ষা ও উদ্বেগ উভয়ই উঠে এসেছে। জরিপে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সরাসরি ও অনলাইনে যথাক্রমে ৪১.৪% ও ৫০.৯% তরুণ মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্তত ১-৩ বছরের মত দায়িত্বে থাকা উচিত। বর্তমানে তরুণদের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এই তথ্য থেকে বোঝা যায়।
সরাসরি জরিপে অংশ নেয়া ২০.৯% ও অনলাইন জরিপে অংশ নেয়া ৫৪.৪% তরুণ নিশ্চিত নন যে বাংলাদেশে শান্তি শৃংখলা বিরাজ করছে কিনা। অপরদিকে, সরাসরি জরিপে ২৫.৩% ও অনলাইনে ৭০% তরুণ মনে করে যে বর্তমান বাংলাদেশে মেয়ে ও নারীরা নিরাপদ বোধ করতে পারছে না।
জীবিকার মাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশী তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হবার মানসিকতা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে ৫২.৫% তরুণ সরাসরি ও ৫১.৫% তরুণ অনলাইন জরিপে ভবিষ্যৎ পেশা হিসেবে উদ্যোক্তা হতে চেয়েছে।
শিক্ষার মান উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে তরুণেরা। সরাসরি ও অনলাইন জরিপে যথাক্রমে ৭১% ও ৮৬.৪% তরুণ মনে করে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি শিক্ষার অবাধ পরিবেশ বজায় রাখার অন্তরায়। এছাড়া,সরাসরি জরিপে ৭৭.৪% তরুণ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চাকরীর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদান করে মনে করলেও অনলাইন জরিপের ক্ষেত্রে ৭৯.৩% তরুণ তা মনে করে না।
সরাসরি ও অনলাইন জরিপে যথাক্রমে ৭৫.১% ও ৬৪.৮% তরুণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে নিজেদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবের শিকার হচ্ছে তরুণেরা, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৫.১% তরুণ সরাসরি জরিপে ও ৭৩.১% তরুণ অনলাইন জরিপে এমনটাই মত দিয়েছে। এ তথ্যই বলে দেয় যে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তরুণেরা এখন আগের চেয়ে আরও বেশি সচেতন।
১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের তরুণদের মধ্যে সরাসরি জরিপে ৯৫.৫% ও অনলাইন জরিপে ৯৫.৭% তরুণ আগামী নির্বাচনে ভোট দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
সরাসরি জরিপে ৮৬.৪% ও অনলাইন জরিপে ৩৯.২% তরুণ মনে করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বজায় আছে। পক্ষান্তরে, অনলাইন জরিপের ২৪.৫% তরুণ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির ব্যাপারে নিশ্চিত নয়।
সরাসরি জরিপে ৬৮.৬% ও অনলাইন জরিপ ৮৪.৯% তরুণ মনে করে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কোন নির্দিষ্ট দলের প্রতি পক্ষপাত মূলক আচরণ প্রদর্শন করা উচিত নয়।
সরাসরি ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত জরিপে যথাক্রমে ২৮.৯% ও ৪৯.৫% তরুণ মনে করে বাংলাদেশের মিডিয়া বাংলাদেশের সমসাময়িক অবস্থার সঠিক তথ্য প্রচার করে না।
দেশের ২১.৮% তরুণ সরাসরি জরিপে ও ৪৭.৮% তরুণ অনলাইন জরিপে জানিয়েছে তারা বিদেশে স্থায়ী হতে চায়।
তবে আশার কথা এই যে, সরাসরি ও অনলাইন জরিপে ৮৫.৮% ও ৮২.৯% তরুণ ই আবার দেশে ফিরে আসতে চায় যদি উল্লেখিত বিষয়গুলোর ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। দেশের নানান সমস্যা ও প্রতিকূলতা স্বত্তেও জরিপে অংশ নেয়া বেশিরভাগ তরুণ-ই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক ও আশাবাদী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিওয়াইএলসি’র নির্বাহী পরিচালক তাহসিনা আহমেদ বলেন “যুব সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী আগামীর রুপরেখা তৈরীর জন্য ইয়ুথ ম্যাটারস সার্ভে একটি প্রমাণভিত্তিক দলিল। এই সমীক্ষনটি আমাদের দেখিয়েছে যে দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যুব সমাজ সবার আগে সংস্কার চায়। তারা চায় দেশে দুর্নীতি বন্ধ হোক, স্বজনপ্রীতি দূর হোক, নাগরিকদের- বিশেষ করে নারীদের অধিকার, নিরাপাত্তা ও সম্মান নিশ্চত থাকুক। তারা নির্ভয়ে কথা বলার পরিবেশ চায়। তারা দেশের উন্নয়ন ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ চায়। তারা বলেছে যে এইসব সংস্কার কার্যকর করার জন্য সরকারকে সময় দিতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সরকারের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে তারা কাজ করতে চায়। কিছু সংখ্যক নতুন রাজনৈতিক দল আসুক তা চাইলেও বেশিরভাগ তরুণ তরুণী চায় যে পুরানো দলগুলোর সংস্কার হোক, রাজনীতিতে ভাল মানুষ প্রার্থী হিসেবে আসুক। তাদের আকাঙ্খা সমূহ বাস্তবায়ন করা আমাদের সবার দায়িত্ব।”
“আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে পারছে না,” বলেন
বিওয়াইএলসি-এর স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার মুনিরা সুলতানা।
তিনি আরও বলেন, “এ সমস্যার সমাধানে বিওয়াইএলসি তাদের প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে সমস্যা সমাধান,সরাসরি জরিপে ৭৭.৪% তরুণ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চাকরীর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদান করে মনে করলেও অনলাইন জরিপের ক্ষেত্রে ৭৯.৩% তরুণ তা মনে করে না।
সরাসরি ও অনলাইন জরিপে যথাক্রমে ৭৫.১% ও ৬৪.৮% তরুণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে নিজেদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবের শিকার হচ্ছে তরুণেরা, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৫.১% তরুণ সরাসরি জরিপে ও ৭৩.১% তরুণ অনলাইন জরিপে এমনটাই মত দিয়েছে। এ তথ্যই বলে দেয় যে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তরুণেরা এখন আগের চেয়ে আরও বেশি সচেতন।
১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের তরুণদের মধ্যে সরাসরি জরিপে ৯৫.৫% ও অনলাইন জরিপে ৯৫.৭% তরুণ আগামী নির্বাচনে ভোট দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
সরাসরি জরিপে ৮৬.৪% ও অনলাইন জরিপে ৩৯.২% তরুণ মনে করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বজায় আছে। পক্ষান্তরে, অনলাইন জরিপের ২৪.৫% তরুণ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির ব্যাপারে নিশ্চিত নয়।
সরাসরি জরিপে ৬৮.৬% ও অনলাইন জরিপ ৮৪.৯% তরুণ মনে করে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কোন নির্দিষ্ট দলের প্রতি পক্ষপাত মূলক আচরণ প্রদর্শন করা উচিত নয়।
সরাসরি ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত জরিপে যথাক্রমে ২৮.৯% ও ৪৯.৫% তরুণ মনে করে বাংলাদেশের মিডিয়া বাংলাদেশের সমসাময়িক অবস্থার সঠিক তথ্য প্রচার করে না।
দেশের ২১.৮% তরুণ সরাসরি জরিপে ও ৪৭.৮% তরুণ অনলাইন জরিপে জানিয়েছে তারা বিদেশে স্থায়ী হতে চায়।
তবে আশার কথা এই যে, সরাসরি ও অনলাইন জরিপে ৮৫.৮% ও ৮২.৯% তরুণ ই আবার দেশে ফিরে আসতে চায় যদি উল্লেখিত বিষয়গুলোর ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। দেশের নানান সমস্যা ও প্রতিকূলতা স্বত্তেও জরিপে অংশ নেয়া বেশিরভাগ তরুণ-ই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক ও আশাবাদী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিওয়াইএলসি’র নির্বাহী পরিচালক তাহসিনা আহমেদ বলেন “যুব সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী আগামীর রুপরেখা তৈরীর জন্য ইয়ুথ ম্যাটারস সার্ভে একটি প্রমাণভিত্তিক দলিল। এই সমীক্ষনটি আমাদের দেখিয়েছে যে দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যুব সমাজ সবার আগে সংস্কার চায়। তারা চায় দেশে দুর্নীতি বন্ধ হোক, স্বজনপ্রীতি দূর হোক, নাগরিকদের- বিশেষ করে নারীদের অধিকার, নিরাপাত্তা ও সম্মান নিশ্চত থাকুক। তারা নির্ভয়ে কথা বলার পরিবেশ চায়। তারা দেশের উন্নয়ন ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ চায়। তারা বলেছে যে এইসব সংস্কার কার্যকর করার জন্য সরকারকে সময় দিতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সরকারের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে তারা কাজ করতে চায়। কিছু সংখ্যক নতুন রাজনৈতিক দল আসুক তা চাইলেও বেশিরভাগ তরুণ তরুণী চায় যে পুরানো দলগুলোর সংস্কার হোক, রাজনীতিতে ভাল মানুষ প্রার্থী হিসেবে আসুক। তাদের আকাঙ্খা সমূহ বাস্তবায়ন করা আমাদের সবার দায়িত্ব।”
“আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে পারছে না,” বলেন
বিওয়াইএলসি-এর স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার মুনিরা সুলতানা।
তিনি আরও বলেন, “এ সমস্যার সমাধানে বিওয়াইএলসি তাদের প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে সমস্যা সমাধান,