নাবিন আহমেদ:
গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন থেকে জোর করে টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক সংগঠন ও স্থানীয় বিএনপির দুই নেতাদের বিরুদ্ধে। সোমবার(১৪ অক্টোবর) এ নিয়ে জয়দেবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ভবানীপুরে পলমল সাফা সোয়েটারস লিমিটেড—২ কারখানায় কয়েক’শ শ্রমিক ফ্যাক্টরির ভেতরে অসন্তোষের কারণে—২শো শ্রমিককে চাকরী থেকে অব্যাহতি দেন। সে—সময় কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ৩মাস ১০ দিনের বেতন ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকরা বিষয়টি মেনে নেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়— শ্রমিকদের পাওনা টাকা আদায় করতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন তৃণমূল গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে শামীম খান ও ফাতেমা আক্তার নামে দু’জন ব্যক্তি।
একই সঙ্গে মালিক পক্ষের হয়ে বিষয়টি সমাধানে কাজ করেন গাজীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন রিজভী এবং দপ্তর সম্পাদক সায়েম মোল্লা। ভুক্তভোগীরা জানান, সোমবার বিকেলে পাওনা পরিশোধ করতে স্থানীয় সাফারী পার্ক হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে ওই দুই বিএনপি নেতার নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন ভুক্তভোগী শ্রমিক ও ফেডারেশনের নেতারা। পরে শ্রমিকদের উপস্থিতিতে পাওনা পরিশোধ করতে শুরু করেন মালিক পক্ষ। অভিযোগ উঠেছে, সেই সময়ে উপস্থিত ওই দুই শ্রমিক ফেডারেশন নেতা মধ্যস্থতার নামে প্রায় প্রত্যেক শ্রমিকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ৭ হাজার টাকা করে আদায় করেন। থানায় করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত কেটে পড়েন তারা।
গাজীপুর অভ্যুত্থানকারী ছাত্র শ্রমিক জনতা সংগঠনের নেতা আরমান হোসাইন বলেন,পলমল সাফা সোয়েটারস লিমিটেড—২ কারখানার চাকুরিচুত্য শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন ও বকেয়াদি পরিশোধ করার সময় শ্রমিক ফেডারেশনের পরিচয়দানকারী দুই নেতা এবং সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং দপ্তর সম্পাদক মিলে এক মাসের টাকা হাতিয়ে নেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাতীয় তৃণমূল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার জানান, তাদের কাছ থেকে কোন জোরপূর্বক টাকা নেওয়া হয়নি। শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করায় তারা আমাদের খুশি হয়ে কেউ পাঁচশো কেউ দুই হাজার দিয়েছে।
পলমল সাফা সোয়েটারস লিমিটেড কারখানার প্রশাসন কর্মকর্তা রেজা বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।
অভিযোগের বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন রিজভী বলেন,মালিকপক্ষ এ ঘটনায় আমার একটু সহযোগিতা চেয়েছিলো। আমি শুধু একটু সহযোগিতা করেছি। টাকাপয়সা নিয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, “শ্রমিকদের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”