ভূমিদস্যুতার অভিযোগে সরকারি চাকরিজীবী নুরুদ্দিন মিয়া প্রশ্নের মুখে

মাহবুবুর রহমান: 

ভূমিদস্যুতা ও ফৌজদারি অপরাধের একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত সরকারি চাকরিজীবী নুরুদ্দিন মিয়া বর্তমানে প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে বহাল তবিয়তে পদে রয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় জনগণসহ সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

৫১ বছর বয়সী নুরুদ্দিন মিয়া, যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল ধানবাড়ির বাসিন্দা এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ২০২৪ সালের পূর্বে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ ও প্রবাসীদের জমি দখল করে ভুয়া দলিল দেখিয়ে বিক্রি করেছেন অথবা নিজ নামে দলিলভুক্ত করেছেন।

তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় দায়েরকৃত একটি গুরুতর ফৌজদারি মামলা (মামলা নম্বর: সিআর ৯৩১/২৪/২০২৪) বর্তমানে বিচারাধীন। মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৪, ১৪৭, ১৪৯, ১৫৯, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৩৭৯, ৩৪ ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বেআইনি সমাবেশে অংশগ্রহণ, মারপিট ও গুরুতর আঘাত প্রদান, চুরি ও হত্যাচেষ্টা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মতো অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান থাকলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বাধ্যতামূলক। কিন্তু নুরুদ্দিন মিয়াকে এখনো দায়িত্ব থেকে অপসারণ না করায় প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা বিধিমালা অনুযায়ী এটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

স্থানীয় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রভাবশালী অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে নুরুদ্দিন মিয়া প্রশাসনিক তদারকি এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাদের দাবি, দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগ যাচাই, অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দখলকৃত জমি ফেরত দেওয়া হোক। একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্বতন্ত্র তদন্তের দাবিও উঠেছে।

জনস্বার্থ ও সুশাসনের স্বার্থে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের মতে, নৈতিকতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এ ধরনের অভিযোগকে উপেক্ষা করা হলে তা পুরো প্রশাসনিক কাঠামোর প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *