মিরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস: প্রশাসনের নেতৃত্বে সম্মিলিত শ্রদ্ধা, ইউএনও ও বিএনপি প্রার্থীর অংশগ্রহণ

এন আলম রাসেল চৌধুরী :

​জাতীয় পতাকার সম্মান প্রদর্শন ও আলোচনা সভায় শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণ
​যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হলো চট্টগ্রামের মিরসরাই হানাদার মুক্ত দিবস। একাত্তরের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল মিরসরাই। দিনটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
​৮ ডিসেম্বর, শনিবার সকাল ১১টায় উপজেলা সদরস্থ বধ্যভূমিতে এই শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এদিন মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এবং সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকাটি।
​শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক উপস্থিতি
​শুরুতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোমাইয়া আক্তার-এর নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিরসরাই ইউনিটের সদস্যরা ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি সম্মান জানান।
​শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচিতে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিন। তিনি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বধ্যভূমিতে ফুল দেন এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
​এছাড়াও, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ সারিবদ্ধভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। উপস্থিত সকলে একাত্তরের শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
​আলোচনা সভায় আত্মত্যাগ স্মরণ
​পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোমাইয়া আক্তার বলেন, “মিরসরাই মুক্ত দিবস শুধু একটি তারিখ নয়, এটি আমাদের স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। আজকের এই দিনে আমরা মিরসরাইয়ের সকল শহীদদের আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
​বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নুরুল আমিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারব না। সকল ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিকামী শহীদদের স্বপ্নপূরণ করাই হোক আজকের দিনের অঙ্গীকার।”
​বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই অঞ্চলের যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে এই দিনে মিরসরাই শত্রুমুক্ত হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা এবং ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সমন্বিত আক্রমণে হানাদার বাহিনী পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিল।
​দিনটি উপলক্ষে উপজেলা জুড়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *