মুসলিম বিশ্বের স্মরণকালের বৃহৎ জানাজা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় এই জানাজায় অংশ নেন লাখ লাখ মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মী, সাধারণ নাগরিক, রাজনৈতিক নেতারা এবং বিদেশি কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন, যারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।

বুধবার বিকাল ৩টা ৩ মিনিটে শুরু হওয়া জানাজায় ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের খতিব। জানাজার আগে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় মানুষ পদে পদে ভিড় জমান। এমন ভিড় যে, তিল ধারণের জায়গা প্রায় পাওয়া যাচ্ছিল না। জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতারা।

এতে বিদেশি কূটনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর জাতীয় সংসদ ভবনে বড় ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে শোকবার্তা হস্তান্তর করেন। এ বার্তায় ভারত গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সারদার আয়াজ সাদিক ঢাকায় পৌঁছান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পাকিস্তান হাই কমিশন বাংলাদেশও তাদের ফেসবুক পেজে এ তথ্য নিশ্চিত করে।

এর আগে, বুধবার সকাল ৯টার দিকে খালেদা জিয়ার মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তার বাসভবন ‘ফিরোজায়’ নেওয়া হয়। জাতীয় পতাকায় মোড়ানো গাড়িতে মরদেহটি রাখা হয়, যা জনসাধারণের কাছে শেষবার দেখার জন্য একটি দৃশ্যমান আয়োজন ছিল।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।

এই জানাজা শুধু রাজনৈতিক নেতাদের জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ ভাবমূর্তিরও প্রতিফলন ঘটিয়েছে। বিশেষ করে নারীরা ও তরুণরা জানাজায় উপস্থিত হয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান, যা তার ব্যক্তিত্ব ও দেশের রাজনীতিতে তার অবদানের স্বীকৃতি বহন করে।

লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি, আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা, রাজনৈতিক নেতাদের সমবেদনা – সবমিলিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা হয়ে উঠেছে এক ঐতিহাসিক ও প্রভাবশালী মুহূর্ত, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসে দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *