সংসদ নির্বাচন ছাড়া সংস্কার সম্পন্ন হবে না: সাকি

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “বিপ্লব করলেও শেষ পর্যন্ত একটি সংসদ, একটি সংবিধান এবং জনপ্রতিনিধির মধ্য দিয়েই যেকোনো প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রতিষ্ঠা পায়। কাজেই আগামী সংসদ নির্বাচন ছাড়া আমরা এই পুরো সংস্কার প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে পারব না।”

রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাকি বলেন, “আমরা আইনি বাধ্যবাধকতার বিষয়েও একমত হয়েছি। জনগণ গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদন দিবে, এবং তা আগামী সংসদের মাধ্যমে আইনি বাধ্যবাধকতায় পরিণত হবে। এটি নিশ্চিত করবে যে আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়া জনগণের স্বীকৃত এবং বৈধ।”

তিনি আরও বলেন, “যে সনদ, অর্থাৎ জুলাই জাতীয় সনদ, তৈরি হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে মৌলিক সংস্কারের ক্ষমতা আমরা গণভোটের মাধ্যমে আগামী সংসদের কাছে অর্পণ করার ব্যাপারে একমত হয়েছি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারলে বাংলাদেশে আমরা নতুন, শক্তিশালী এবং গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু করতে পারব। তবে যদি নির্বাচন কোনোভাবে প্রলম্বিত হয় বা বাধাগ্রস্ত হয়, তা কারও জন্যই শুভ ফল বয়ে আনবে না।”

জোনায়েদ সাকি দেশের বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনকে দেশের সবচেয়ে বড় স্বার্থ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য এই পথরেখাকে সফলভাবে সম্পন্ন করা। নির্বাচন ছাড়া যে কোনো সংস্কার বাস্তবায়িত হবে না। সুতরাং, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করতে হবে। এতে করে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দৃঢ় হবে এবং জনগণের অধিকার নিশ্চিত হবে।”

তিনি দেশের ছাত্র সমাজকে সংস্কার ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ বাহক হিসেবে উল্লেখ করেন। সাকি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা ছাত্র সমাজ গ্রহণ করেছে। এ কারণে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আওয়াজ সমাজের মধ্যে উত্থিত হয়েছে। এটি এমন নয় যে কোনো একজন ব্যক্তির সিদ্ধান্ত সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বরং দীর্ঘদিন ধরে সমাজের ভেতরে রাজনৈতিক সংগ্রাম ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ঐক্য এবং ধারণা তৈরি হয়েছে। এজন্য ছাত্র সমাজ এটিকে আলিঙ্গন করেছে এবং উৎসাহের সঙ্গে উদযাপন করছে।”

তিনি বলেন, “ছাত্র সমাজের এই সমর্থন প্রমাণ করছে যে নতুন প্রজন্ম দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই এই আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে বাস্তবায়ন করতে হবে। সংবিধান, জনগণ এবং নির্বাচিত সংসদ—এই তিনের সমন্বয় ছাড়া কোনো সংস্কার কার্যকর হবে না।”

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বক্তারা দেশকে গণতান্ত্রিকভাবে পুনর্গঠন, নির্বাচন সুষ্ঠু করা এবং সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

জোনায়েদ সাকি সমাবেশের শেষ ভাগে সকলকে আহ্বান জানান, “আমরা যদি একত্রিত থাকি, আইন, সংবিধান ও গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার সম্পন্ন করি, তবে বাংলাদেশে সত্যিকারের নতুন যুগ শুরু করা সম্ভব। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব থাকবে যেন নির্বাচনের আগে ও পরে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়। সাধারণ মানুষ, ছাত্র সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর যৌথ অংশগ্রহণ দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *