স্টাফ রিপোর্টার ঃ
চাঁদপুরের কচুয়ায় হযরত শাহ্ নেয়ামত শাহ্ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষার্থী-অভিভাবকের বিক্ষোভ ও তোপের মুখে পদত্যাগ করেও স্বপদে বহাল। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিলম্বে পদত্যাগপত্র বাস্তবায়নের দাবি জানান।
প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থআত্মসাৎসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার, মাউশি, চাঁদপুর জেলা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা, কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় গভর্ণিংবডির চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেন শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
অভিযোগসুত্রে এবং শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, হযরত শাহ্ নেয়ামত শাহ্ উচ্চ বিদ্যালয় উপজেলার একটি স্বনামধন্য ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি সুনাম বহন করে আসছে।
২০১৮ইং সালে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান ইলিয়াছ মিয়া। তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তার নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদানে ধ্বস নামে। যারফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী তার পদত্যাগের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন।
এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পদত্যাগের দীর্ঘ প্রায় ২মাস অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয় গভর্ণিংবডির চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তা কার্যকর করেননি। তিনি প্রধান শিক্ষকের সাথে ম্যানেজ হয়েছেন বলেও ইঙ্গিত করেন ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানাযায়, ইলিয়াছ মিয়া প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর বিদ্যালয় তহবিল থেকে মাসিক ৪৭ হাজার টাকা বেতন নেন। যা সহকারী শিক্ষকদের তুলনায় কয়েকগুন অধিক। দরিদ্র শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বেতন এবং অন্যান্য ফি কমাতে বা বিনাবেতনে অধ্যয়নের আবেদন জানালে তাদের সাথে অসাদাচরন করে পড়াশোনা বাদ দিয়ে রিক্সা চালানো কিংবা বাসাবাড়িতে কাজ করতে বলেন।
শিক্ষার্থীদের চাপে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করলেও পুরুষ্কার দেয়া হয়নি। বৃত্তি বা উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিকট থেকেও সেশন ফি বাবদ ৪ হাজার টাকা আদায়সহ অন্যান্য ফি আদায় করেন।
৪ হাজার টাকা সেশন ফি, ২’শ টাকা বেতন, ৬’শ টাকা পরীক্ষার ফিসহ সিসি ক্যামেরা, ইন্টারনেট, কম্পিউটার ল্যাবের খরচ বাবদ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন এর কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করলেও তাদের দীর্ঘ দিনের বেতন বকেয়া রাখেন।
৪ হাজার টাকা সেশন ফি, ২’শ টাকা বেতন, ৬’শ টাকা পরীক্ষার ফিসহ সিসি ক্যামেরা, ইন্টারনেট, কম্পিউটার ল্যাবের খরচ বাবদ অতিরিক্ত বেতন-ফি আদায়ে চাপ প্রয়োগ ও দূর্ব্যবহার করার কারনে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া বলেন, আমি পদত্যাগ করিনি। আমি তো স্কুলেই আছি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় গভর্ণিংবডির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হেলাল চৌধূরীর বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনকরার পরও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।