মোহাম্মদ হোসেন হ্যাপী, ব্যুরো চিফ:
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নতুন করে আরও দুই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা এবং অন্যটি পুলিশের উপর হামলার মামলা। এই কারণে ফের তার জামিন প্রক্রিয়া আটকে গেছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ফতুল্লা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আইভীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি সদর থানায় দায়ের করা পুলিশের উপর হামলার মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর আগে, রোববার (৯ নভেম্বর) হাইকোর্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পোশাক শ্রমিক মিনারুল হত্যার মামলাসহ মোট পাঁচ মামলায় আইভী জামিন পেয়েছিলেন। তবে নতুন করে দুই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর কারণে বর্তমানে তিনি গাজীপুর কাসিমপুর কারাগারেই অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ মে, রাতভর নাটকীয়তার পর ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার নিজ বাসা থেকে আইভীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা চারটি হত্যা মামলা এবং দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা—মোট ছয় মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
আইভীকে নিয়ে এই নতুন শ্যোন অ্যারেস্টে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তারা জানান, নতুন মামলা দুটি আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ, এবং তাদের দৃষ্টিতে আইভীকে স্বাভাবিকভাবে বিচার কার্যক্রমের আওতায় রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আইভীর আইনজীবীরা এই নতুন অ্যারেস্টের বিষয়ে বলেছেন, “এটি সম্পূর্ণভাবে প্রক্রিয়াগত জটিলতা। আমরা শিগগিরই উচ্চ আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব। আমাদের আশা, আইভীকে দ্রুত জামিনে মুক্তি দেওয়া হবে।”
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও শ্রমিক আন্দোলনের পটভূমিতে এই মামলাগুলি আইভীর রাজনৈতিক ভুমিকাকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে আদালতের দায়িত্ব অনুযায়ী আইভীকে নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় রাখা জরুরি।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ জনগণ ও পোশাক শ্রমিকরা এই ঘটনাকে নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকে আইভীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন।
আইনজীবী এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আইভী সংক্রান্ত মামলার রায় এবং জামিন প্রক্রিয়া স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। তারা আশা করছেন, প্রশাসন এবং আদালত উভয়ই আইভীর বিরুদ্ধে মামলা মোকাবিলায় নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভূমিকা পালন করবেন।