প্রশ্ন:
আমি জানতে চাচ্ছি, ব্যাংকে ডিপিএসে জমা রাখার ফলে যে সুদ পাওয়া যায়, তা কি নিজে না খেয়ে গরিবদের দিতে পারব? অথবা মসজিদের উন্নয়নে খরচ করতে পারব?
উত্তর:
ইসলামi শরিয়তের দৃষ্টিতে সুদ সম্পূর্ণ হারাম ও ঘৃণিত। একজন মুমিনের উচিত, সুদ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা এবং যতদূর সম্ভব তা থেকে বাঁচার চেষ্টা করা।
তবে যদি কোনোভাবে সুদের টাকা কারও অ্যাকাউন্টে চলে আসে এবং তা ফেরত দেওয়ার উপায় না থাকে (যেমন ব্যাংকের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সুদদাতা চিহ্নিত করা অসম্ভব), তাহলে সে টাকা নিজে খাওয়া যাবে না, বরং সওয়াবের নিয়ত না করে যাকাত গ্রহণে উপযুক্ত কোনো গরিব-মিসকিনকে দিয়ে দিতে হবে।
📚 (সূত্র: আহসানুল ফাতাওয়া ৭/১৬; ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত ১০/১২৬)
তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সুদের টাকা মসজিদের কাজে ব্যবহার করা বৈধ নয়।
কারণ মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর—এটি পবিত্র স্থান, যা হালাল ও পাক সম্পদ দিয়ে নির্মাণ ও পরিচালিত হওয়া আবশ্যক। নাপাক বা হারাম অর্থ যেমন সুদের টাকা মসজিদের উন্নয়নে ব্যয় করা শরিয়তের দৃষ্টিতে অনুচিত ও অগ্রহণযোগ্য।
দারুল উলুম দেওবন্দ-এর ফতোয়ায় বলা হয়েছে—
“সুদের টাকা নাপাক সম্পদ। আর নাপাক সম্পদ ইবাদতের স্থান যেমন মসজিদে ব্যয় করা জায়েয নয়।”
এটি প্রমাণ করে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
“নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই গ্রহণ করেন।”
📚 (মিশকাত, হাদিস ২৪১)
সারসংক্ষেপ:
-
সুদের টাকা গরিব-মিসকিনকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করা যেতে পারে।
-
মসজিদ বা কোনো ইবাদতের স্থানে তা খরচ করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
-
নিজে খাওয়া, আত্মীয়দের দেওয়া বা হালাল সম্পদের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করাও হারাম।
সুতরাং, সুদের অর্থ থেকে মুক্ত থাকতে সচেষ্ট হওয়া এবং প্রয়োজনে তা সঠিক নিয়মে দান করাই একজন মুমিনের দায়িত্ব।