বাগবাটি ইউপি প্রশাসক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড় : দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে অভিযুক্ত

মোঃ ফেরদৌস হোসেন:

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং ঘুষ বাণিজ্যের একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে ইউপি সংশ্লিষ্ট অনেকেই তাকে বাগবাটি ইউনিয়নে দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রকৃত সদস্যদের বাদ দিয়ে নিজে একক সিদ্ধান্ত নেওয়া, ইউপি সদস্যদের কোন ধরণের সমন্বয় ছাড়াই কাজ বণ্টন, গরীব অসহায়দের জন্য বরাদ্দকৃত বিভিন্ন সরকারি সুবিধা দলীয় স্বার্থে বণ্টন এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সরকার প্রদত্ত ঈদ উপহারের ভিজিএফ কার্ডের বণ্টনেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে দলীয় নেতাকর্মী এবং নিজেদের লোকদের একাধিক কার্ড প্রদান করা হয়। অনুসন্ধানে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ডেভিডকে একাধিক কার্ড দেয়ার সত্যতাও পাওয়া যায়। এমনকি প্রশাসক সোহেল রানা নিজেও কার্ড বণ্টনে পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় পরিষদে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হয় ঈদ উপহারের চাল থেকে। এ নিয়ে জনমনে চরম ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হলেও কৌশলে এসব অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া হয়।

সম্প্রতি কাবিখা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পশ্চিম গাড়াদহ পাকা রাস্তা থেকে আকবরের বাড়ি পর্যন্ত পাঁচ লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকার প্রকল্পে পিআইসি সভাপতির নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রশাসক সোহেল রানার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে প্রকল্পের পিআইসি সভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, “প্রশাসক সোহেল রানা ভালো মানুষ। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তবে সরল মনে আমি প্রকল্পের ভাগ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলেছি, সেটি এখন প্রকাশিত হয়ে গেছে।”

অন্যদিকে, নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে প্রশাসক মোঃ সোহেল রানা বলেন, “এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। পাঁচ লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকার প্রকল্পে যদি আমাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়, তাহলে প্রকল্প চলবে কীভাবে?”

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, “অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সাধারণ জনগণ মনে করছেন, বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের শিকড় অনেক গভীরে। প্রশাসক সোহেল রানা যেন এই দুর্নীতির বড় কারিগর। তারা এই বিষয়ে প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ে দ্রুত তদন্ত এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *