টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ব্রিজের দুই পাশে নিম্নমানের ব্লক ব্যবহার করে এলজিইডির কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, জয়ভোগ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রিজটির পাশে বসানো ব্লক এতটাই নরম যে সামান্য আঘাতেই ভেঙে যাচ্ছে, যা এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ৩৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজটি (চেইনেজ ২৯৫০ মিটার) Package No. CBU-100/purto-58, eTender ID No. 413720 এর আওতায় নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৯৯ লাখ ২০ হাজার ৯৭৭ টাকা ১৫ পয়সা।
কাজের সময়সীমা ২০২০ সালের ৫ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৪ জুলাই পর্যন্ত থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দুর্গা এন্টারপ্রাইজ (জেভি) নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয়। পরে সময় বাড়িয়ে প্রকল্পটি ২০২৪ সাল পর্যন্ত নেওয়া হলেও বাস্তবে ব্রিজের ব্লক স্থাপন চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুন মিয়া বলেন,
“প্রায় তিন কোটি টাকার এই প্রকল্পে যে ব্লক বসানো হয়েছে তা একেবারেই নিম্নমানের। হাতে ধরলেই ভেঙে যায়। আমরা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা পাইনি।”
অভিযোগের প্রেক্ষিতে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ তোরাপ আলী সাংবাদিকদের বলেন,
“এ বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারব না, আপনারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।”
১৬ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান সরেজমিন পরিদর্শনের আশ্বাস দেন। ২১ অক্টোবর পরিদর্শন করলেও সাংবাদিকদের কোনো মন্তব্য দেননি। পরে ফোনে যোগাযোগে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
অভিযুক্ত ঠিকাদার মোঃ লোকমান হোসেনের ছেলে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“কোনো অনিয়ম হয়নি, সব কাজ নিয়ম মেনে করা হয়েছে।”
স্থানীয়রা দাবি করছেন, এলজিইডির কর্মকর্তাদের অবহেলা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির কারণে সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় হয়েছে। তারা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর মাধ্যমে তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।