নিজাম উদ্দিন:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে এক যুবকের। প্রতিপক্ষের হামলায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে নববিবাহিত আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কান কাটা কাদিরা (৪২)-কে।
নিহত কাদের চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোফরান মিয়ার বাড়ির মো. গোফরানের ছেলে। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চেরাং বাড়ির দরজায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাদের সম্প্রতি বিয়ে করেন প্রায় সাত-আট মাস আগে। বিয়ের পর থেকেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়।
সেই বিরোধের জেরে শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষরা কাদেরকে একা পেয়ে বেধড়ক পেটায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করে তাঁকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এটি কোনো আকস্মিক হামলা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তারা বলেন, কাদের এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিলেন, যা প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী মেনে নিতে পারেনি। সেই শত্রুতার জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে তাদের ধারণা।
নিহতের স্ত্রী ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। স্বজনদের দাবি, বিবাহের পর কাদের জীবন পরিবর্তনের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু অতীতের শত্রুতাই তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল। যেভাবে তাঁকে পেটানো হয়েছে, তা রীতিমতো হিংস্রতার উদাহরণ। এলাকায় এমন ভয়াবহ দৃশ্য আমরা আগে দেখিনি।
রক্তে রঞ্জিত সেই রাতের পর এখন বেগমগঞ্জের চেরাং বাড়িতে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা ও আতঙ্কের ছায়া। এক সময়ের চঞ্চল যুবক কাদেরের জীবন শেষ হলো আধিপত্যের দ্বন্দ্বে। এলাকাবাসী জানান, প্রশ্ন থেকে যায়—মানুষের জীবন কি এখন এতটাই তুচ্ছ হয়ে গেছে যে, ক্ষমতার লড়াইয়ে একের পর এক প্রাণ ঝরে যাচ্ছে?
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান জানান, নিহত কাদেরের বিরুদ্ধে মারামারি ও মাদকসহ চারটি মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, নিহত কাদের অপরাধ জগতে জড়িত থাকায় পরিবারের সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ ছিল না। খবর পেয়ে আমরা রাতেই মরদেহ উদ্ধার করি। লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।