স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার নিবন্ধনে এতদিন ধরে থাকা অঞ্চলভিত্তিক সীমাবদ্ধতা ও পাঁচ দিনের সময়সীমা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ফলে এখন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে, যে কোনো সময় অনলাইনে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধনের শেষ তারিখ অপরিবর্তিত রেখে আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে। একই সময়ের মধ্যে প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্যও নিবন্ধন করতে পারবেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে টিকটকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্বকে আটটি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি অঞ্চলে পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময়সীমা ঠিক করা হয়েছিল। তবে প্রবাসীদের সুবিধা বিবেচনা করে আজ রাত ১২টার পর থেকেই সেই অঞ্চলভিত্তিক কোটাপদ্ধতি ও সময়সীমা বাতিল করা হচ্ছে।
সিনিয়র সচিব স্বীকার করেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া উন্মুক্ত হওয়ায় কিছু কারিগরি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিকানার কাঠামো জটিল হওয়ায় কয়েকটি দেশে ওটিপি পৌঁছায়নি—এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “যেসব ত্রুটি পাওয়া যাবে, আমাদের টেকনিক্যাল টিম তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করবে। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সমস্যাগুলো দ্রুত ঠিক করা সম্ভব হবে।”
একই দিনে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি নিয়েও সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও দক্ষ ও নির্বিঘ্ন করতে ইসি আগামী শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মক ভোটিং (রিকহার্সাল) করবে। এই রিহার্সালের ফলাফল বিশ্লেষণ করে ভোটকেন্দ্র সংখ্যা বৃদ্ধি, ভোটকক্ষের বিন্যাস, জনবল বাড়ানো বা কমানোর মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান আখতার আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় অধ্যাদেশ জারি হয়েছে সোমবার। “দায়িত্ব সম্পর্কে আগেভাগেই ধারণা পেয়ে আমরা মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতিও আগে থেকেই শুরু করা হয়েছে। আপনারা বরং খুশি হবেন, কারণ আমরা অগ্রিম প্রস্তুতি নিয়ে কাজ এগিয়ে রাখছি।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। বিদেশে থাকা প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি ভোটার হয়ে ওঠার সুযোগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন এই উদ্যোগ প্রবাসী জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার প্রয়োগ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করবে বলে মনে করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা।