স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানী ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় আবাসিক হোটেলের আড়ালে গড়ে উঠেছে মাদক কারবার ও অসামাজিক কার্যকলাপের নতুন একটি কেন্দ্র। স্থানীয় বাসিন্দা ও একাধিক সূত্রের দাবি, ‘লেক ভিউ ইন্টারন্যাশনাল (আবাসিক)’ নামের এই হোটেলটি বাহ্যিকভাবে বৈধ ব্যবসা দেখালেও ভিতরে চলছে নারী দেহব্যবসা, ইয়াবা ও বিভিন্ন মাদকের প্রকাশ্য লেনদেন। আর এই পুরো অপকর্মের মূল হোতা হিসেবে উঠে এসেছে হোটেল মালিক মোহাম্মদ দেলোয়ারের নাম।
৯৬ ই প্রগতি সরণি, কুড়িল বিশ্বরোড, কাজীবাড়ি, ভাটারা ১২২৯ নম্বর ঠিকানায় অবস্থিত এই ভবনটি মূলত আবাসিক হোটেল হিসেবে ভাড়া নেয়া হলেও, দীর্ঘদিন ধরেই এখানে অবাধে চলছে মাদক বেচাকেনা ও নারী শোষণের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। স্থানীয়দের দাবি—ভাটারা এলাকায় মাদক ছড়ানোর অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই হোটেলটি। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের আনাগোনা, সন্দেহজনক কক্ষ ভাড়া, হোটেলের কর্মচারীদের নজিরবিহীন স্বাধীনতা—সবকিছুই ইঙ্গিত দেয় যে এখানে বহুদিন ধরে চলছে সুসংগঠিত অপরাধচক্রের কর্মকাণ্ড।
হোটেল মালিক মোহাম্মদ দেলোয়ারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিস্ময়করভাবে জানান, “আমরা যে ব্যবসা করি প্রশাসনকে জানিয়ে করি। আপনাদের কিছু বলার থাকলে তাদের বলেন।” তাঁর এমন মন্তব্য স্থানীয়দের আরও ক্ষুব্ধ করেছে। অনেকেই বলছেন, মালিক প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডকে বৈধতার ছায়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন, আর তাতেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই কারবার।
এ বিষয়ে জানতে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এই হোটেলের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ কতটা সত্য—তা জানতে পুলিশের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এলাকার সচেতন নাগরিকরা বলছেন, কুড়িল বিশ্বরোড ও আশপাশের এলাকায় দিনের পর দিন আবাসিক হোটেলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধচক্র শক্তিশালী হচ্ছে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও বিশেষ অভিযানের দাবি জানিয়েছেন, যাতে এমন হোটেলগুলোর আড়ালে থাকা অপরাধচক্র ধ্বংস করা যায়।
একই সঙ্গে স্থানীয়রা মনে করছেন, যদি এই হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে চলা অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ না হয়, তবে পুরো এলাকা মাদকের করাল গ্রাসে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে সাধারণ মানুষের জন্য।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আবাসিক হোটেলের আড়ালে যেভাবে মাদক ব্যবসা ও নারী শোষণের মতো অপরাধ ছড়িয়ে পড়ছে—‘লেক ভিউ ইন্টারন্যাশনাল (আবাসিক)’ সেই চক্রের একটি ভয়াবহ নমুনা মাত্র। এখন নজর সবার—পুলিশ প্রশাসন আদৌ কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না।